রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেরা ১৩ টি উক্তি | Top 10 quotes of Rabindranath Tagore Editor's pick Highlight শ্লোক বা উক্তি by admin - March 28, 2020April 15, 20200 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আপামর বাঙালীর সেন্টিমেন্ট।কারও কাছে তিনি গুরুদেব, কারও কাছে কবিগুরু, তো কারও কাছে বিশ্বকবি। আবার কারও কাছে তিনি প্রাণের ঠাকুর। একাধারে তিনি ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবিদের মধ্যে একজন। অন্যদিকে, তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, সুরস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক।ভারতের জাতীয় সঙ্গীতও তাঁরই সৃষ্ট। যুগ যুগ ধরে বাংলা সাহিত্যকে পথ দেখিয়েছেন তিনি। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন কবিগুরু। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক, সংগীতস্রষ্টা হওয়ার পাশাপাশি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।কিন্তু তারপর, ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সেই নাইট উপাধি ত্যাগ করেন বিশ্বকবি। জানা যায়, রবীন্দ্র ঠাকুরকে গুরুদেব আখ্যা দিয়েছিলেন স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী। আবার, অন্যদিকে, গান্ধীজীকে মহাত্মা বলে প্রথম সম্বোধন করেছিলেন গুরুদেব রবীন্দ্র ঠাকুর।রবি ঠাকুর যেন কখনই অপ্রাসঙ্গিক নন। সব সময় তিনি নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল। তাঁকে বাদ দিয়ে আমাদের জীবনে বোধহয় একটা মুহূর্তও নেই। র্তিনি তাঁর কলমে লিখে গিয়েছেন সর্বকালের কথা। ওই সময়ে বসে বলে গিয়েছেন আজকের কথা।তাই, আজও তাঁর অমর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে মানুষ খুঁজে পায় বেঁচে থাকার রসদ। খুঁজে পায় বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। আমরা আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তেমনই ১৩ টি উক্তি আপনাদের সামনে তুলে ধরব। বিভিন্ন সময়ে তাঁর লেখা গল্প, কবিতায় এই উক্তিগুলি তিনি লিখে গিয়েছেন। যা আজও সকলকে অনুপ্রাণিত করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেরা ১৩ টি উক্তি (Top 10 quotes of Rabindranath Tagore) ১) নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস। (কণিকা কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত)। অতৃপ্তি মানুষের স্বভাবসিদ্ধ। অধিকাংশ মানুষই সুখী ও সন্তুষ্ট নন।একজন সুখী মানুষও নিজের চেয়ে অন্যকে মনে করেন বেশি সুখী। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, লাভ-ক্ষতি সবার জীবনেরই অঙ্গ। কিন্তু প্রকৃত বিবেচক জানেন, মানুষের অনিঃশেষ আশা-আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ চরিতার্থতা করা কখনই সম্ভব নয়। তাই অন্যের সৌভাগ্য দেখে দুঃখ না পেয়ে নিজের যা-কিছু আছে তা নিয়ে সুখী থাকতে পারলেই পাওয়া যায় তৃপ্তি ও আনন্দ। ২) মনেরে আজ কহ যে, ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে। (ক্ষণিকা কাব্যগ্রন্থের ‘বোঝাপড়া’ কবিতা থেকে সংগৃহীত) রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বোঝাপড়া’ কবিতার মাধ্যমে এক বাস্তবিক সত্যকে তুলে ধরেছেন। জীবনে যাই পরিস্থিতি হোক না কেন, সত্যকে যে সহজে গ্রহণ করে ফেলে, তাঁকে হারিয়ে দেওয়া কঠিন।এই সহজ সত্যটাই এই উক্তির মধ্য দিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। ৩) অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে। ( নৈবেদ্য কাব্যগ্রন্থ থেক সংগৃহীত) যে অন্যায় করে এবং যে অন্যায় করাকে প্রশ্রয় দেয় বা অন্যায়কে সহ্য করে, দুজনেই সমান অপরাধী। নিজে অন্যায় না করলেই যে তার কর্তব্য ফুরিয়ে যায় এমনটা নয়। বরং অন্যায়কে প্রতিহত করাটাও সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই উক্তির মাধ্যমে এই সহজ সত্যিটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৪) বিবাহ না করিয়া ঠকা ভালো, বিবাহ করিয়া ঠকিলেই মুশকিল। (চোখের বালি’ উপন্যাস থেকে সংগৃহীত) সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কারনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয় মানুষকে। কিন্তু সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কারনে বিবাহ করলেও ভালোবাসা একটি সহজাত প্রক্রিয়া। যা কোন নিয়মকানুন মানেনা। তাই, বিবাহ করলেই যে ভালোবাসা হবে তার কোন মানে নেই । এই বাস্তব সত্যিতাই এই সহজ উক্তির মধ্য দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন কবিগুরু। ৫) যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি ১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে ভান্ডার পত্রিকায় একা শিরোনামে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এই দেশাত্মবোধক গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে প্রতিবাদী গান হিসেবে বিখ্যাত হয়।কারও সাহায্য না পেলেও কেউ যেন তার গন্তব্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে যাত্রা বন্ধ না করেন তারই অনুপ্রেরণা হিসেবে এই গানটি রচনা করেন কবিগুরু। ৬) “তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতবিতানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে গেছেন যে, ‘তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি’। তাঁর কথার অর্থ হলো, পতাকা থাকলেই হলো না, তাকে সম্মান আর বহনের সামর্থ্য থাকতে হবে আমাদের। পতাকা মানে একটি দেশের পরিচয়। পুরো বিশ্বের কাছে নিজের দেশের আলাদা একটি পরিচয় বহন করে সেই দেশের পতাকা। একটি স্বাধীন আর সার্বভৌম দেশে পতাকাই তার পরিচিতির মৌলিক স্তম্ভ।যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি, বহু ত্যাগ আর সময়ক্ষেপণ করে একটি দেশ বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের আলাদা আয়তন পায়। সেই স্বাধীন আয়তনের মধ্যেই ওড়ে সে দেশের স্বাধীন পতাকা। ৭) গোলাপ যেমন একটি বিশেষ জাতের ফুল , বন্ধু তেমনই একটি বিশেষ জাতের মানুষ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি এক একটি লোক আছেন পৃথিবীতে যারা বন্ধু হয়েই জন্মগ্রহণ করেন। মানুষকে সঙ্গ দেওয়ার বা আনন্দ দেওয়ার ক্ষমতা তাদের অসামান্য। আমরা সকলেই কাউকে না কাউকে ভালোবাসি। কিন্তু ভালোবাসলেও সকলে ভালো বন্ধু হতে পারেন না। কেউ কেউ ভালো বন্ধু হন। তাই, ফুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ গোলাপের সঙ্গেই বন্ধুকে তুলনা করেছেন বিশ্বকবি। আরও পড়ুন – আর কিছুদিনের মধ্যেই আসতে চলেছে অরিজিৎ এর ছায়াছবি (অরিজিৎ ভক্তরা কোথায়) ৮) মনুষ্যত্বর শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা, আর সমস্তটাই তার অধীন” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বের মধ্য থেকে মানুষ ভালোকে বেছে নেবে বিবেকের দ্বারা, প্রথার দ্বারা নয়- এই হচ্ছে মনুষ্যত্ব। তাঁর মতে, মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন।মানুষ হিসেবে অন্যান্যদের অধিকার, কর্তব্য, দায়িত্ব এবং মর্যাদা সম্পর্কে সবাই আমরা সচেতন হলে সহজ হয়ে যাবে মনুষ্যত্বের শিক্ষালাভ। আর মনুষ্যত্বের শিক্ষা সম্পন্ন হলেই মানবসমাজের যেমন উৎকর্ষ সাধন হবে, তেমনিই প্রকৃতি ও জীবজগতের নিরাপত্তা ও পরিচর্যাও নিশ্চিত হবে। ৯) বেদনা থেকে যে আনন্দের উৎপত্তি, সে আনন্দের তুলনা নেই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি তাঁর এই বিখ্যাত উক্তির মধ্য দিয়ে কবি আনন্দ, কান্না, সুখ, দু:খ সবকিছুই তুলে ধরতে চেয়েছেন।তাঁর মতে, বেদনার পরে যে আনন্দ আসে তা তুলনারহিত। ১০) চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি ভারতের স্বাধীনতার আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এই কবিতাটি প্রতিনিধিত্ব করে একটি নতুন এবং জাগ্রত ভারত সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থর জনপ্রিয় কবিতা গুলির মধ্যে এটি একটি অন্যতম কবিতা।পরে এটিকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদও করেন কবিগুরু।যেটি বাংলা ভাষার মতই সমভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১১) প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস। তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি গীতবিতানের এই কবিতাটির মধ্য দিয়ে চির প্রেমিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের প্রগাঢ়তা প্রকাশ পায়।প্রহর শেষের রাঙা আলোয় প্রেয়সীর চোখেই যে ভালোবাসার ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায় তা হয়তো একমাত্র বিশ্বকবির কল্পনাতেই রচিত হতে পারে। ১২) মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানুষের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি সুন্দর প্রকৃতির প্রতি যেমন চিরন্তন মানুষের ভালবাসা। ঠিক তেমনি মানুষের প্রতি মানুষের আকর্ষণও অপরিসীম। তাই, জীবনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি মৃত্যুর কথা জেনেও পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে, তার রূপে মুগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কথা ভুলে গিয়ে আমৃত্যু বেঁচে থাকতে চান সকলেই।আর সেই কথাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাণ কবিতার এই উক্তিগুলির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। ১৩) প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষণ কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি চির প্রেমিক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তখনকার সময় হোক বা এখনকার সময় যখনই কেউ প্রেমে পড়ে তখন তাঁর স্মরণাপন্ন হন সকলেই। তাঁর লেখা গান, কবিতা হোক বা উপন্যাস বা ছোট গল্প। সব জায়গাতেই রয়েছে প্রেমের অবাধ বিচরণ। কবির বিভিন্ন রচনার মধ্যেই প্রেমকে নানা ভাবে নানা রূপে পেয়েছেন তাঁর পাঠকরা। তাই তাদের সকলের কাছেই মহা মূল্যবান কবির এই উক্তিটি। এই উজ্জ্বল নক্ষত্র বাংলা সাহিত্যকে দিয়ে গিয়েছেন অসংখ্য শিল্পকর্ম। করে গিয়েছেন অনবদ্য কিছু সৃষ্টি। যা আজও মানুষের পথ চলার সঙ্গী। সকলের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা। তাঁর সৃষ্ট অসংখ্য উক্তি আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। আজও জীবনের চলার প্রতি পদে আমাদের সকলের কাছে পাথেয় হয়ে রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন উক্তি। সেই সব অমূল্য ভান্ডারের মধ্য থেকে ১৩ টি উক্তি আমরা তুলে আনলাম আপনাদের জন্য।আপনাদের সকলের কিরকম লাগল নিশ্চয়ই জানাতে ভুলবেন না। Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share