You are here
Home > Don't Miss > শ্লোক বা উক্তি > মোটিভেশনাল উক্তি বাংলা | অনুপ্রেরনামূলক উক্তি

মোটিভেশনাল উক্তি বাংলা | অনুপ্রেরনামূলক উক্তি

মোটিভেশনাল উক্তি বাংলা

অনুপ্রেরণা বা মোটিভেশান বাস্তব জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার ফলে মানুষ নিজস্বতাকে তুলে ধরতে পারেন। পৃথিবী বক্ষে কিছু মানুষ আছে যারা নিজভাবে মোটিভেটেড হয় এবং কিছু মানুষ আছে যাদের মোটিভেটেড করা হয়। মোটিভেশন অষুধের মত, দীর্ঘ মেয়াদে অনুপ্রাণিত থাকতে প্রতিদিন আপনাকে এটা চর্চা করতে হবে। চিন্তাভাবনা এমন একটি বিষয় যা আমরা নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি ।জীবনের কিছু অধ্যায় এমন আসে যেখানে আমরা আমাদের নিজস্বতা হারিয়ে ফেলি এবং ডিমোটিভেটেড হয়ে যাই এবং নিজের প্রতি ভারসাম্যচূত হয়। নিজের পূর্ব পরিস্থিতিতে ফেরার তাগিদে আমরা মোটিভেশনাল বাংলা উক্তির প্রতি আকৃষ্ট হই এবং জীবনে চলার পথে পাথেয় করি। মোটিভেশনাল বাংলা উক্তি মানুষের প্রেরণার উদ্ভব ঘটায়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা গল্প আছে। লড়াইয়ের গল্প, ব্যর্থতা পেরিয়ে উঠে দাঁড়ানোর গল্প , হারা-জেতার গল্প,নতুন উদ্যোমে এগিয়ে যাওয়ার গল্প –এই সব মিলিয়েই আমাদের জীবন।আমাদের জীবনটা কখনো সমান্তরালভাবে চলে না।হাজারো চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হয়।মাঝে মাঝে এতো লড়াইয়ের মধ্যে আমরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ি।তবুও হাজারো ক্লান্তি কাটিয়ে উঠে আমরা চেষ্টা করি সফলভাবে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার।পথে আসা সমস্ত বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে চলার অন্ধকারের পরে নতুন আলোর সন্ধানে।থেমে না যাওয়া,হেরে না যাওয়াতেই তো জীবনের সার্থকতা।ব্যর্থতা যদি আসেও,হতাশা যদি আসেও তাকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যোমে আগামীর উদ্দেশ্যে এগোনই তো জীবনের মূল লক্ষ্য।

ব্যস্ততা মূলক জীবনে আমরা নিজেদের প্রিয় লেখক,বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের বিখ্যাত পুস্তকগুলি পড়ার সময় খুব সংক্ষিপ্ত পাই। তাই আমাদের বাস্তব জীবনের কিছু অধ্যায়ে এর থেকে বিচ্ছেদ ঘটে। মোটিভেশনাল বাংলা-উক্তি মানুষকে সফলতা শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করে । বিখ্যাত মনীষীগণ তাদের উক্তির মাধ্যমে আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে নানাভাবে সহায়তা করে।জীবনে এমন কিছু সময় আসে যখন নিজের দুঃখ কষ্টগুলোকে নিজেদের মনোবলের থেকে বেশি মনে হয় তখন একটি ইতিবাচক মোটিভেশনাল বাংলা উক্তিই পারে আমাদের বিশ্বাস ও মনোবলকে আরো উত্তজীবিত করতে ।যেসমস্ত বিখ্যাত মানুষের জীবনী আমাদের জীবনের আদর্শ সেই সমস্ত মানুষের মোটিভেশানাল বাংলা উক্তি আমাদের মনোবল ও উৎসাহ বাড়াতে বারংবার সাহায্য করে।নতুন পথের দিশা দেখায়,নির্ভিকভাবে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা দেয়। হারার পরেই আসল জেতার সার্থকতা বোঝায় । প্রতিটি সফল মানুষেরই অনুপ্রেরণা নেয়ার নিজস্ব পদ্ধতি আছে। তবে অনুপ্রেরণা সবারই প্রয়োজন হয়। অনুপ্রেরণা বা মোটিভেশন একজন মানুষকে সারাদিন তার ক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য কাজ করার শক্তি যোগায়। আসুন সেই সমস্ত মহান ব্যাক্তিত্ত্বদের উক্তি বিস্তারিত বর্ণনা করা যাক যা আমাদের জীবনকে আরো উৎজীবিত করে তুলবে, আশা যোগাবে অন্ধকারের মধ্যে আলোর দিশা হয়ে।

১.” মহাবিশ্বের সীমাহীন পুস্তকালয় আপনার মনের ভিতরে অবস্থিত ।”

স্বামী বিবেকানন্দ

পুস্তক ব্যক্তির চরিত্র গঠন করতে সাহায্য করে। ব্যক্তির মধ্যে নানা পুস্তক বিদ্যমান। যেখান থেকেই নানান চিন্তা ভাবনা চিন্তা ধারার প্রসার প্রস্ফুটিত হয়। প্রকৃতি থেকে শিক্ষা জ্ঞান ধারা, পারিপার্শ্বিক থেকে রীতিনীতি নিয়মকানুন যা আমরা মনের মধ্যে জমিয়ে রাখি। সেখান থেকেই আমরা নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে প্রসারিত করি এবং জীবনে চলার পথের পাথেয় করি।

২. “যদি সূর্যের মতো উজ্জ্বল হতে চাও,তাহলে প্রথমে সূর্যের মত পুড়তে হবে।”

এ.পি.জে.আব্দুল কালাম

মানুষের কাছে কোন কিছুই সহজলভ্য নয়। অনেক কঠিন এবং কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পরিস্থিতিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে করতে বহু বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় । সেই পরিস্থিতিকে নিজের করায়ত্ত করতে পারলে নিজেকে প্রমাণ করা যায়। সকল বিষয়ে জ্ঞান এবং একনিষ্ঠতা প্রয়োজন । তবেই সূর্যের মতো দৃঢ় হতে পারবে এবং নিজস্ব তেজ বিচ্যুরিত করতে পারবে। এই বিচ্যুরিত আলোকিত করতে পারবে এবং নিজের দৃঢ়তার পরিচয় প্রকাশ্যে আসবে।

৩. ” ভুল করার সকল দরজা যদি বন্ধ করে দাও, তা হলে ঠিক করার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়।”

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সাদা কালো রঙেই আমাদের জীবন । রামধনুর মতো রঙিন রং থাকা সত্বেও আমরা সাদা কালো রঙের মধ্যে জড়িয়ে পড়ি । আমরা মানুষ আর কথাতেই আছে ,’মানুষ মাত্রই ভুল হয়’ অর্থাৎ ভুল করা মানে তুমি পরাজিত এটা নয় । বরং ভুল থেকে মানুষ অনেক কিছু শিক্ষা লাভ করে । শেখার মানসিকতা থাকলে ভুল হবেই এবং তারফলে ঠিকটা হবার ঠিকানা ।

৪.”হাজারটা নয়, আপনি যা করতে চান তার জন্য একটি বড় কারণ খুঁজুন, সেটাই যথেষ্ট।”

সন্দীপ মহেশ্বরী

নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একটি বড় কারণই যথেষ্ট । অনেক কারণের প্রয়োজন হয়না। একটি লক্ষ্য থাকলে সারা বিশ্ব জয় করা যায় । তার জন্য লক্ষ্য দৃঢ় রাখা প্রয়োজন ।

৫. “যদি জীবনে সংগ্রাম, ঝুঁকি না থাকে , তাহলে জীবন বাঁচাটা অনেকটা ফিকে হয়ে যায়।”

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

শব্দটির অর্থ ব্যাপক না পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে বেঁচে থাকতে হয় জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব। সংগ্রাম এবং ঝুঁকির মাধ্যমে নিজেকে সুন্দরভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারা যায়।

৬. “বিখ্যাত হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে বিশ্বাসী হওয়া।”

ওয়ান্ট হুইটম্যান

কথায় আছে ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর ‘। নিজেকে অপরের কাছে বিশ্বাসী করে তোলা হলো বিখ্যাত হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ । কোনো কিছুর প্রতি বিশ্বাস, লক্ষ্য এবং ভালোবাসা না থাকলে বিখ্যাত হওয়া বা নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব ।

৭. “যদি সন্তুষ্টি নিয়ে ঘুমাতে যেতে চাও, তবে একটি লক্ষ্য নিয়ে সকাল শুরু করো।”

জর্জ লরমির

তোমার জীবনের নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত। সেই লক্ষ্য থাকলেই তুমি শান্তিতে ঘুমোতে পারবে । সেই লক্ষ্য কে পাথেয় করেই আমরা নতুন সকাল শুরু করতে পারব ।

৮. “সফল হওয়ার সত্যিকার ইচ্ছা থাকলে ব্যর্থতা কখনও আমাকে হতাশ করতে পারবে না।”

ওজি ম্যাডিনো

জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের নানান পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় ।পরিস্থিতি মানুষের মানসিক শক্তি বাড়ায় । তার ফলে মানুষের মধ্যে তৈরি হয় লড়াই করার মনোভাব । যা কোনো বিষয়ে ভেঙ্গে পড়তে দেয় না । তোমার লক্ষ্য যদি সঠিক হয় তাহলে তুমি সেই বিষয়টার প্রতি অকৃতকার্য হলেও তুমি ভেঙে পড়বে না বরং নিজেকে আরো ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা করবে ।

৯.”সবকিছুই অসম্ভব মনে হয, যতক্ষণ না কাজটি শেষ হয়।”

নেলসন ম্যান্ডেলা

বর্তমান সমাজে মানুষ কোন কাজে ব্যর্থ হলেই হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে যায়। তার ফলে মানুষের মধ্যে সেই কাজ করার প্রবণতা আস্তে আস্তে কমে যায়। ফলে মানুষ সব সেই কাজটি কে অসম্ভব বলে মনে করে। সেই লক্ষ্য কে যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ করছো ততক্ষন পর্যন্ত সেই কাজটি কঠিন মনে হয় এবং অসম্ভব বলে মনে হয়।

১০.”চাঁদকে লক্ষ্য বানিয়ে নাও। যদি লক্ষ্যচ্যুত হয়, তবুও অন্তত একটি তারা পাবে।”

ডব্লিউ. ক্লেমেন্ট স্টোন

জীবনে তোমার লক্ষ্য যদি বড় হয় তাহলে তুমি চাঁদকে ছুঁতে পারবে। তোমার লক্ষ্য কে সঠিক হতে হবে। আর তুমি চাঁদকে ছুঁতে না পারো তাতে হতাশ হবার কিছু নেই। তুমি চাঁদ না পাও তারা অবশ্যই পাবে । সবই তোমার লক্ষ্যের উপর নির্ভর করছে তুমি কি চাও। বিশাল কিছু না পেলেও তুমি ছোট ভালো কিছু পেলে পারো। নিজের অপর বিশ্বাস এবং ধৈর্য রাখতে পারলেই তুমি জীবনে সব কিছু পেতে পারো।

আরও পড়ুন – Steve Jobs: ‘টেক’ মহলের রাজা স্টিভ জবস এর জীবনী

অবশেষে বলা যায় যে, মোটিভেশনাল বাংলা উক্তি মানুষের বন্ধুর মতো। প্রতিটি ক্ষেত্রে মোটিভেশনাল বাংলা উক্তি আমাদের বাস্তব জীবনে চলার পথের পাথেয়। নিজেকে নিজের মতো করে মোটিভেটেড করতেও মোটিভেশনাল বাংলা উক্তি খুবই কার্যকরী। নিজেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে মোটিভেটেড করা উচিত এবং অপর কেও মোটিভেটেড করা উচিত। মোটিভেশনাল বাংলা উক্তি আমাদের আত্মবিশ্বাসী , সংযম , স্বনির্ভরশীল এবং ধৈর্যশীল করে তোলে। সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে। জীবন আমাদের সবার কাছে একটা সুযোগ।সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করতে হবে। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে,থেমে গেলে চলবে না। বাঁধা যতই আসুক না কেনো ভেঙ্গে পড়ল হবে না। আবার উঠে দাঁড়াতে হবে।জীবন কখনো সহজভাবে চলে না। ব্যর্থতা জীবনে আসবেই কিন্তু চেষ্টা থামালে চলবে না। সুসময় আসবে ভেবে বসে থাকলে চলবে না। প্রতিটা মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে পরিশ্রম করে যেতে হবে। কিছু হচ্ছে না ভেবে হাল ছেড়ে দিলে হবে না,ধৈর্য্য রাখতে হবে। যে যাই বলুক নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে আর পরিশ্রম করে যেতে হবে। নিজের লক্ষ্য কে থামিয়ে রাখলে চলবে না। নিজের লক্ষ্যের প্রতি লেগে থাকতে হবে। কারণ একদিনে সাফল্য আসবে না। তবে চেষ্টার দ্বারা হাজারো ব্যর্থতার গল্প পেরিয়ে সাফল্য ঠিক আসবেই।কারণ মনে রেখো অন্ধকার রাতের শেষেই আগামীর সূর্যের উদয় হয়।

উৎস- ইন্টারনেট

এই পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক করুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Top
error: Content is protected !!