ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিন | Best hair care tips রান্নাবান্না ও রূপচর্চা by admin - April 25, 2020May 14, 20211 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন! নারীর সৌন্দর্যকে অন্যতম মাত্রা দান করে লম্বা সুন্দর ঘন রেশমী চুল। আমাদের প্রত্যেকেরই মনে আশা থাকে একগোছা লম্বা সুন্দর রেশমী চুলের। অথচ দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় চুলের দিকে ঠিকমতো খেয়াল করাই হয়ে ওঠে না। তাই চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শুষ্ক। আর এই রুক্ষ ও শুষ্ক চুলে চিরুনি চালালেই প্রচুর চুল উটতে থাকে, চুলের ডগা কাটতে থাকে। যার ফলে চুল পড়তে শুরু করে। বর্তমানে আমরা প্রত্যেকেই চুল পড়া নিয়ে সমস্যায় জর্জরিত। তাই আমরা ত্বকের যেমন যত্ন নিয়ে থাকি। ত্বকের লাবণ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে– আমাদেরকে চমকপ্রদ, উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তুলতে। ঠিক তেমনি চুলের ও যত্ন নিতে হবে- ঝলমলে, স্বাস্থ্যজ্বোল, সুন্দর ও ঘন রেশমী চুলের জন্য! এছাড়া, অতি রাসায়নিকযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার , অত্যাধুনিক স্টাইলে চুল কাটা, চুলে অতিরিক্ত হিট প্রয়োগ – এ সব আমাদের স্টাইল ও ফ্যাশনে সাহায্য করলেও চুলের ক্ষতি করে। চুলের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে বাঁধা সৃষ্টি করে ফলে প্রচুর চুল পড়তে থাকে। তাই আমাদের চুলের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে।প্রত্যেকেরই চুলের ধরন আলাদা। তাই চুলের ধরন/ টাইপ অনুযায়ী যত্ন নেওয়ার কৌশল ও আলাদা আলাদা হয়। মাসে একবার হেয়ারপ্যাক বা হেয়ার ওয়েল ব্যবহার করলে হবে না প্রতিদিন চুলের যত্ন নিতে হবে। আমরা অতি সহজেই ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে পারি যা স্বল্প ব্যয়ে ও অল্প সময়ে সম্ভব। যেভাবে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে পারি তা নিম্নলিখিত : প্রথমেই প্রতিদিনের চুলের যত্নের রুটিনটি এভাবে সাজাতে হবে:- সকালে ঘুম থেকে উঠেই চুল আঁচড়াতে হবে। নাহলে চুলের জট থেকেই যাবে। আর এই জটবাঁধা চুল আছড়ালেই চুল কাটতে শুরু করে।বড়ো দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। তানাহলে চুল আঁচড়ানোর সময় টান পড়লে চুল কাটতে থাকে।নিয়মিত চুল ধুয়ে নিতে হবে। যাদের নর্মাল চুল তারা একদিন পর পর চুল ধুয়ে নিতে পারে । যাদের তৈলাক্ত চুল তাদের প্রতিদিন চুল ধুয়ে নিতে হবে।ভেজা চুল আঁচড়ানো যাবে না। ভেজা চুল নরম থাকে তাই নরম তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে মুছতে হবে।চুল নরম ও মসৃণ থাকে এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।অনেকেই চুলে তেল ব্যবহার করে না। শ্যাম্পুর পাশাপাশি চুলে তেল দিতে হবে। শুষ্ক চুলে প্রাণ ফেরাতে, চুলের ঝড়ে পড়া রুখতে ও চুলকে রেশমী ও মসৃণ করতে তেলের বিকল্প নেই।অকারণে হেয়ারড্রায়ার ব্যবহার না করাই ভালো। চুলে বারবার হিট নেওয়া , চুলে হেয়ার কালার করা, চুলের স্টাইল বা ফ্যাশনে অধিক কেমিক্যাল না ব্যবহার করাই ভালো।উষ্ণ তেল দিয়ে মালিশ করতে হবে।উষ্ণ তেল মালিশে যেমন চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি পায় তেমন চুলের গোড়া ও শক্ত হয়।চুলের যত্ন নিতে নারকেল তেল, আমন্ড ওয়েল,অলিভ ওয়েল, ক্যাস্টর ওয়েল যেমন অনবদ্য তেমনি মেথিরপ্যাক, অ্যালভেরা হেয়ারপ্যাক, টকদই হেয়ারপ্যাক এগুলি খুবই কার্যকরী। আপনার চুল যদি খুব বেশী পাতলা হয়ে যায় তাহলে নিচে দেওয়া এই সিরামটি ব্যবহার করতে পারেন, চুলকে পুনরায় ঘন করবে। আমি নিজে খুব ভালো ফল পেয়েছি। এখানে ক্লিক করে কিনুন কিউসেরা সিরাম এরপরই আমরা দেখে নেবো কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে অতি সহজেই হেয়ারপ্যাক, হেয়ারওয়েল তৈরী করে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে পারেন যেভাবে তা বিশদে উল্লেখিত হল: ১. নারিকেল তেল : নারিকেল তেল চুলকে খুব ভালো ময়শ্চারাইজার করে। নারিকেল তেলে কয়েকটি মেথি দিয়ে ফুটিয়ে ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ রেখে তারপর শ্যাম্পু করলে চুল নরম হয়। চুলের গোড়া শক্ত ও হয়। ২. আমন্ড ওয়েল : অলিভ ওয়েলের সাথে আমন্ড ওয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার চুলে মাসাজ করলে। চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ৩. অলিভ ওয়েল : অলিভ ওয়েলে থাকা এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের পুষ্টি জোগায়। এছাড়া এতে ভরপুর ভিটামিন ই চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার অলিভ ওয়েল মাথার স্ক্যাল্পে ব্যবহার করা উচিত। ৪. ক্যাস্টর ওয়েল : এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে যা চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। সারারাত ক্যাস্টর ওয়েল মেখে পরের দিন শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিলে খুব ভালো হয়। এছাড়া ক্যাস্টর ওয়েলের সাথে ভিটামিন ই বা অলিভ ওয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ বার মাখলে ভালো ফল হয়। ৫. তিলের তেল : তিলের তেল চুলের কন্ডিশনিং করতে ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া খুসকি কমাতে হটওয়েল ট্রিটমেন্টে তিলের তেল ব্যবহার করা হয়। চুলের যত্ন নিতে তেল মাসাজের সাথে সাথে হেয়ারপ্যাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে ২-৩ বার হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায় যেভাবে তা নিম্নলিখিত : ১.অ্যালভেরা হেয়ারপ্যাক : অ্যালভেরাতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন আর মিনারেলস চুলের পুষ্টি যুগিয়ে চুলকে ঘন ও ঝলমলে করে তোলে। চুলের যত্ন নিতে অ্যালভেরার হেয়ারপ্যাক খুবই কার্যকরী। পদ্ধতি : একটি পাত্রে ১ কাপ ফ্রেশ অ্যালভেরা জেল, ক্যাস্টর ওয়েল ২ চামচ, মেথি গুঁড়ো ২ চামচ নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে সারারাত রেখে দিতে হবে। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনিং করতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহে ১-২ বার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। ২. ডিম দিয়ে হেয়ারপ্যাক : ডিমের কুসুমে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট চুলের কন্ডিশনিং করতে সাহায্য করে। পদ্ধতি : ডিমের কুসুম ১ টা, অ্যালভেরার জেল ৪ চামচ, অলিভ ওয়েল ৩ চামচ একসাথে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে ।এরপর একটা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে ২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। ডিমের গন্ধ অনেকে সহ্য করতে পারে না তাই এটি সপ্তাহে একদিন করা যেতে পারে। ৩. দইয়ের হেয়ারপ্যাক : দইয়ের সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে একটা ঘন প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগিয়ে আধঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার করলে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে। ৪. পেপের হেয়ারপ্যাক : পাকা পেঁপের জুস ৪-৫ চামচ , অলিভ ওয়েল ৩ চামচ, এক কাপ অ্যালভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে ১ ঘন্টা রাখতে হবে। তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে শ্যাম্পু করতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহে ১ বার করে দেখুন যথেষ্ট লাভজনক। ৫. আমলকি হেয়ারপ্যাক : কিছুটা আমলকি নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন একটা পেষ্ট তৈরি করে নিতে হবে। এর সঙ্গে ২ চামচ শিকাকাই পেষ্ট, এক চামচ মেথি পেষ্ট নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী নিতে হবে। এই প্যাকটির সাথে নারিকেল তেল বা তিলের তেল মিশিয়ে উষ্ণ গরম করে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে দিতে হবে। আরও পড়ুন – মুখের ব্রণ -র দাগ দূর করে মুখের তারুণ্য ফেরানোর কয়েকটি ঘরোয়া কৌশল ৬. পেঁয়াজের প্যাক : পেঁয়াজ ত্বক ও চুলের জন্য টনিকের কাজ করে। এছাড়া, পেঁয়াজে আছে সালফার যা চুল পড়া বন্ধ করে ও নতুন চুল গজাতে ভীষণ উপকারী। পদ্ধতি : ১ টা আস্ত পেঁয়াজের পেষ্ট নিয়ে এর সাথে ২ চামচ শিকাকাই পেষ্ট, ২ চামচ কাঠ বাদামের তেল নিয়ে একসাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে আধঘন্টা রাখতে হবে। পরে শ্যাম্পু করতে হবে। এর ফলে চুলের শুষ্কতা কমবে। চুল মসৃণ ও প্রাণোচ্ছল হবে। উপরোক্ত হেয়ারপ্যাকগুলি ব্যবহার করে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায় অতি সহজেই ।তবে সবগুলি একসাথে করলে বিশেষ ফল পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের চুলের ধরণ অনুযায়ী যার যেটা ঠিক মনে হবে সেটাই ব্যবহার করতে হবে।এভাবেই নিয়মিত ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিলেই চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে স্বাস্থ্যজ্বোল ও চুলের গোড়া শক্ত হয়ে চুলের বৃদ্ধি হবে। এর সাথে সাথে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার রাখতে হবে যাতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। আর চুল হয়ে উঠবে রেশমী, ঘন ও সুন্দর।। Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share