করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার, বাড়ান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীর ও স্বাস্থ্য by admin - May 15, 2020May 15, 20200 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share আজ গোটা বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ এর প্রকোপে বিপর্যস্ত আমাদের স্বাভাবিক জনজীবন। গোটা বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর আকার ধারন করেছে। করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন, গৃহে বন্দি মানুষ, স্তব্ধ কর্মব্যস্তজীবন। মানুষ দুশ্চিন্তা গ্রস্থ করোনা থেকে মুক্তির উপায় কি? করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার কি? বিশেষজ্ঞদের এবং চিকিৎসকদের কথা মতো করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে আমরা নিজেদের গৃহবন্দি করেছি, চেষ্টা করছি এর থেকে মুক্ত হতে। তাই আমরা মাক্স ব্যবহার করে এবং স্যানিটাইজার করে, সংক্রমণ থেকে মুক্ত হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। চিকিৎসকদের মতে, এর সাথে সাথে দরকার শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ারকে বাড়ানো। শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার কম থাকলে দূর্বল শরীরে রোগের সংক্রমণ হবেই। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বাড়াতে হবে। সেজন্য দরকার শরীরের সঠিক পুষ্টি, উপযুক্ত পরিমাণ ভিটামিন যা করোনা ভাইরাস কে প্রতিরোধ করতে পারে। সেক্ষেত্রে নিজেদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় একটু গুরুত্ব দিতে হবে। তাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার খেতে হবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নিয়মিত পাতে রাখুন ভিটামিন, মিনারেলস, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার। খাদ্য তালিকায় রাখুন এমন সব খাবার যা শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ারকে বাড়িয়ে দেয়। এরকমই রোগ প্রতিরোধ্য উল্লেখযোগ্য ১৫ টি খাবার হল : ১. সুষম ও পুষ্টিকর খাবার : নিয়মিত খাবারের তালিকায় প্রচুর শাক সবজি ও ফল খান। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়বে। ২. ভিটামিন সি : ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায, তাই প্রতিদিন খাবারের তালিকায় ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করুন। পাতিলেবু, আমলকি, কমলালেবু, মোসাম্বি যা পাবেন এই লকডাউনের বাজারে বেশি করে কিনে নিয়ে রাখুন এসব কিছুই শরীরে ভিটামিন সি এর যোগান দেবে। ৩. ভিটামিন ডি : আমরা প্রত্যেকেই জানি সূর্য রশ্মি থেকে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয় শরীরে। এই লকডাউনের বাজারে প্রত্যেকেই ঘরে বন্দি রোজকার রুটিন মাফিক অফিস যাওয়ার ব্যস্ততা নেই। তাই রোজ সকালে হাঁটুন, একটু সূর্যের আলোতে থাকুন। ফলে ভিটামিন ডি এর যোগান পাবেন এবং শরীরের এক্সসারসাইজ ও হবে। এছাড়া ও ডিমের কুসুম, মাছের তেল, গরুর কলিজা, চিজ – এসবেও ভিটামিন ডি রয়েছে। ৪. প্রোটিন : প্রোটিন শরীরের রোগের বিরুদ্ধে লড়ার শক্তি যোগায়। ডিম, মাছ , মাংস এরকম প্রোটিন যুক্ত খাবার খান। লকডাউনের বাজারে মাছ মাংস তেমন কেনা সম্ভব না হলে ডাল খান। ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে । ৫. তেতো : প্রতিদিন ভাত পাতে উচ্ছে বা নিম পাতা খান। এতে রোগ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করবে। ৬. মিনারেলস ও ফাইবার : টোম্যাটো সচরাচর আমাদের প্রত্যেকেরই ঘরে থাকেই। এই টোম্যাটোর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে প্রচুর এবং রয়েছে মিনারেলস ও ফাইবার। এছাড়া বেগুন, ঢ্যাঁড়স, কুমড়ো এসব কিছুতেই রয়েছে প্রচুর মিনারেলস ও ফাইবার। ৭. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে ব্যবহার করা মশলা তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেলস রয়েছে যা করোনা প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।যেমন – আদা : আদাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। ঠান্ডা লাগলে আদা চা খেলে খুব উপকার হয়। জ্বর, সর্দিকাশি, শ্লেষা কমাতে আদা বিশেষ উপকারী। রসুন : রোজ ভাত পাতে একটু কাঁচা রসুন খাওয়া খুবই দরকার। রসুন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান যা শরীরের রোগ সংক্রমণের প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া রক্তকে পরিশুদ্ধ করে রসুন এবং জ্বর, সর্দিকাশি, শ্লেষা কমাতে ও সাহায্য করে। কাঁচা হলুদ : কাঁচা হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হয়। তাই রোজ সকালে খালি পেটে একটুকরো কাঁচা হলুদ খান। কালোজিরা : আমাদের দৈনন্দিন রান্নাঘরের ব্যবহার করা মশলার মধ্যে কালোজিরা একটি অন্যতম যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।তাই রোজ রান্নাতে কালোজিরা খাওয়া দরকার। ৮. প্রোবায়োটিক : দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক উপাদান শরীরের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মিটিয়ে দেয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। রোজ ভাত পাতে নিয়ম করে টকদই রাখুন। ৯. জিঙ্ক : সামুদ্রিক মাছ,বাদাম ও দুধে রয়েছে জিঙ্ক এবং ভিটামিন বি-৬ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে । ১০. বিটা ক্যারোটিন : লাল বাঁধাকপি, রাঙাআলু, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম এ সমস্ত বিটা ক্যারোটিন যুক্ত খাবার। যা রোগ সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। ১১. মধু : মধু রোগ জীবাণু ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই রোজ সকালে খালি পেটে একটু মধু একটু ইষৎ উষ্ণ গরম জলে খান। ১২. মাশরুম : অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উপাদান। এছাড়া ও মাশরুমে থাকা ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ১৩. তুলসী : তুলসী অতি প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে রোগ প্রতিরোধে। আমাদের প্রত্যেকেরই বাড়িতে তুলসী গাছ থাকেই তাই এই লকডাউনের বাজারে রোজ ৩-৪ টি তুলসী পাতা খান। চা এর সাথে তুলসী দিয়ে পান করতে পারেন। ১৪. দুধ : প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিন সমৃদ্ধ দুধ শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ারকে বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে । ১৫. ভিটামিন ই : আমন্ড বাদাম, কাঠবাদাম, রাজমা ও দানাশস্য জাতীয় খাবার ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার গুলি ছাড়াও আরও ২ টি খুবই কার্যকরী ও উপকারী পানীয় আপনারা সেবন করতে পারেন। বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন এই পানীয় যথা: রোজ রাতে খাবার পর অথবা দিনের যে কোনও নির্দিষ্ট সময়ে একগ্লাস ইষৎ উষ্ণ গরম দুধে একটু হলুদ মিশিয়ে খান।একগ্লাস গরম জলে একটা পাতিলেবুর রস এবং তাতে এক টুকরো আদা, এক টুকরো রসুন ও এক টুকরো কাঁচা হলুদের একটা পেস্ট বানিয়ে একসাথে মিশিয়ে নিন। এই পানীয়টা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। আরও পড়ুন – করোনা ভাইরাস বিশ্ব মহামারী ২০২০ | Coronavirus: Pandemic Of 2020 উপরোক্ত আলোচনাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপযোগী খাবার গুলো নিয়মিত খেলেই শুধু হবে না। তার সাথে সাথে দরকার উপযুক্ত পরিমাণে জল খাওয়া এবং ব্যায়াম করা। ও পরিমাণ মতো ঘুম।অবশ্যই নিজেদেরকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। সর্বোপরি, আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে, সোশ্যাল ডিসট্যান্স অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। দেশ ও দশের মঙ্গল কামনায় এবং গোটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস নির্মূল করতে আমাদের সকলকে সচেতন হয়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখতে হবে। নিজেদেরকে সুস্থ করতে এবং স্বচ্ছ নির্মল ভারতবর্ষ গড়তে আসুন আমরা সবাই তৎপর হই যেহেতু – “সকলের তরে সকলে আমরাপ্রত্যেকে আমরা পরের তরে।।” তথ্য সূত্র: সংবাদ মাধ্যম ও ইন্টারনেট Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share