স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বাণী ও শিক্ষা বিষয়ক বাণী শ্লোক বা উক্তি by admin - October 28, 2020October 29, 20200 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share “I am a voice without form”—স্বামী বিবেকানন্দস্বামী বিবেকানন্দ শুধু ভারতবাসী কে নয় সমগ্র পৃথিবীর মানুষ কে জ্ঞানের আলোর সন্ধান দিয়েছেন। স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বা শিক্ষা বিষয়ক বাণী মানবজাতির অজ্ঞান কে নাশ করে অন্তরের জ্ঞানালোক কে বিকশিত করেছে।স্বামীজী ঋদ্ধিসমান্ধিত ব্যক্তিত্ব, ত্যাগে বেহিসাবি, কার্যে বিরামহীন, প্রেমে সীমাহীন জ্ঞান ছিল যেমন গভীর তেমনই বহুমুখী।তিনি ছিলেন আধুনিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আধ্যাত্মিক জনক। স্বামীজী প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ধর্ম এবং বিজ্ঞানের, অতীত ও বর্তমানের সমন্বয় করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ যে শিক্ষা বিষয়ক বাণী গুলি ব্যক্ত করেছিলেন আসুন তা নিয়ে আলোচনা করা যাক। ১) “ব্রাহ্মণের ছেলেদের শিক্ষার জন্য যদি একজন শিক্ষকের প্রয়োজন হয়, তবে শূদ্রের ছেলেদের শিক্ষার জন্য অন্ততঃপক্ষ চারজন শিক্ষকের প্রয়োজন। অজ্ঞতার অন্ধকারে যারা নিমজ্জিত তাদের সেবা না করলে পৃথিবীর মঙ্গল হবে না।”স্বামী বিবেকানন্দ শিক্ষার অধিকার সবার। জনসাধারণ কে শিক্ষিত করা ও তাদের উন্নতি করাই জাতিও জীবন গঠনের পন্থা। সমাজকে উন্নত করতে গেলে শিক্ষাকে উন্মুক্ত করা দরকার। তাই ব্রাহ্মণ পুত্রের যেমন শিক্ষার প্রয়োজন ঠিক তেমনই সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই জ্ঞানের আলোক আনা প্রয়োজন। জ্ঞানের আলোকের আগমন না ঘটলে জাতিও জীবন থেকে এই অন্ধকার দশার মুক্তি নেই। তাই শিক্ষা কে সর্বগ্রহী করে তুলতে হবে।সকলের জন্য শিক্ষা কে সমান অধিকার প্রেরণ করতে হবে। ২) “শিক্ষা হচ্ছে মানুষের অর্ন্তঃনিহিত সত্ত্বার পরিপূর্ণ বিকাশ।”স্বামী বিবেকানন্দ মানুষের অর্ন্তর ই হল সর্ব শক্তির আকর তা সুষ্ঠ পথে চালনা করার জন্য প্রয়োজন হল শিক্ষা। যেমন চকমকি পাথরের মধ্যে আগুন জ্বালার সম্ভাবনা থাকে,সেজন্য ঘর্ষণের ফলে তা জ্বলে ওঠে, আগুন বাইরে থেকে আসেনা ঠিক তেমনই মানুষের অর্ন্তরে যে জ্ঞানের উৎস প্রথম থেকেই আছে তার প্রকাশ সাধনই হল শিক্ষা। ৩) “যে দেশে যে জাতি নারীকে শ্রদ্ধা করে না সে জাতি বড় হতে পারে না।”স্বামী বিবেকানন্দ স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর শিক্ষা বিষয়ক বাণীর মধ্যে নারী শিক্ষা সম্পর্কে অভিমত উল্লেখযোগ্য। সমাজে নারীর স্থান অবমূল্যায়নের জন্য তিনি অশিক্ষা কেই দায়ী করেছেন।নারী সুশিক্ষা পেলে জগতের আদর্শ নারী হয়ে উঠতে পারবে।তিনি মনে করতেন সাধারণ আর মেয়েদের ভেতর শিক্ষার বিস্তার না ঘটলে উন্নতি হবার জো নেই। ৪) “জ্ঞানের আলো জ্বালো, এক মুহুর্তে সব অশুভ চলে যাবে।”স্বামী বিবেকানন্দ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাত সারে প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই দেবত্ব আছে। সকলে তাদের এই অর্ন্তনিহিত দেবত্ব সম্পর্কে শিক্ষা দিলে সে মনের সকল কলুষতা, কুসংস্কার, অন্ধকার মুছে নিজেই নিজের মুক্তি সাধন করবে।জগতের উন্নতির জন্য প্রথম প্রয়োজন হল স্বাধীনতা।শিক্ষার মধ্যে দিয়ে এই স্বাধীনতার ই আগমন ঘটাতে হবে। ৫) “আমাদের চাই কী জানিস? স্বাধীনভাবে স্বদেশী বিদ্যার সঙ্গে ইংরেজী আর বিজ্ঞান পড়ানো, চাই কারিগরি শিক্ষা, চাই-যাতে শিল্প বাড়ে।”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা বিষয়ক বাণী স্বামীজী বলেছেন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষার সমন্বয়ের কথা,যেখানে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বদেশে র শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা, বিনয় নিজের প্রতি আত্মবিকাশ, আত্মনির্ভরতা চারিত্রিক দৃঢ়তা র সঙ্গে গতিশীল পাশ্চাত্যের কারিগরি প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ব্যবহারিক বিদ্যার জ্ঞানে পরিপূর্ণ করে তোলে যাতে তারা নিজেদের আত্মবিকাশ ও আত্মমর্যাদাবোধ কে জাগ্রত করতে পারে। ৬) “মানবজাতির সেবা এবং আত্মার মুক্তিই হল শিক্ষার একমাত্র লক্ষ”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা বিষয়ক বাণী স্বামীজী শিক্ষাকে শুধুমাত্র পরীক্ষায় পাশের জন্য করতে হবে এই সংকীর্ণতায় বিশ্বাসী নন। তাঁর কাছে শিক্ষা হল মুক্তির ঠিকানা। মানব জাতির উন্নতি হলে দেশের তথা দশের উন্নতি হবে তাতেই শিক্ষার প্রকৃত অর্থের স্বার্থকতা। স্বামীজী আত্মার মুক্তির মধ্য দিয়ে মনের মুক্তির হদিস দিয়েছেন যা ব্রহ্মের সাথে সম্পর্কিত। ৭) “ওঠো জাগো এবং লক্ষ না পোঁছানো পর্যন্ত থেমো না”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষা বিষয়ক বাণী স্বামীজী মনে করতেন শিক্ষার লক্ষ্য হল সমাজে প্রত্যেকের দ্বারে দ্বারে জ্ঞানের আলো কে পোঁছে দেওয়া। সমাজ থেকে অশিক্ষার কালো ছায়া না সরলে সমাজের উন্নতি হবেনা, সর্বকাল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার আসবে না। যতদিন না আমাদের সমাজের প্রত্যেক মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত থামলে চলবেনা। আমাদের লক্ষ হবে সমাজে প্রত্যেক মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। বাধার শিকল ভেঙে ভগীরথের মতো মৃতপ্রায় ভারত ভূমির অন্তরে বইয়ে দিতে হবে জ্ঞান রসে ধারা।ভারত ভূমি আবার গৌরবান্বিত হবে, বিশ্ব মাঝে শীর্ষ স্থান লবে। ৮) “সমাজসেবার আদর্শে শিক্ষার্থী কে উদ্বুদ্ধ ও নিযোজিত করা দরকার।”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বাণী শিক্ষার্থীর উৎসাহ ও কর্মশক্তি কে কেবলমাত্র অধ্যায়ন ও আত্মোন্নতিতে সীমাবদ্ধ করলে চলবেনা।তার শিক্ষা কে করতে হবে উন্মুক্ত যাতে নিজের সঙ্গে দেশের , সমাজের উন্নতি তে অগ্রনী ভূমিকা গ্রহণ করেতে হবে।আত্মকেন্দ্রিকতার বন্ধন কে উপেক্ষা করে সার্বজনীকভাবে শিক্ষা কে উন্মিলিত করে দিতে হবে।এখানে শিক্ষার সার্থকতা শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণতা। ৯) “জনশিক্ষা র মধ্যে দিয়ে জনজীবন কে জাগ্রত করতে হবে।”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বাণী স্বামীজীর শিক্ষামূলক বাণী মধ্যে অধিক উল্লেখযোগ্য হল সমাজ সুশিক্ষিত হলে তবেই সমাজের আগ্রগতি ঘটবে।সমাজের অগ্রগতি না ঘটলে দেশ অন্ধকারের অতলে নিমজ্জিত হবে, দেশের দূর্দশা কোনো কালে ঘুচবে না।তাই সর্বপ্রথম করনীয় শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে জনসাধারণ কে শিক্ষালোকেস্নাত করে অশিক্ষার অন্ধকার কে দূর করতে হবে। তাহলেই দেশে সুষ্ঠভাবে উন্নতির শিখর আহরণে সক্ষম হবে। ১০) “শিক্ষার অন্যতম লক্ষ মনুষ্যত্বপূর্ণ ও চরিত্র বান মানুষ তৈরি”স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বাণী শিক্ষার ভিতর দিয়ে খাঁটি চরিত্রের সংগঠন, অটুট স্বাস্থ্য, দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়, কুসংস্কার মুক্ত মনের অধিকারী হতে হবে।তবেই সমাজের ও দেশের সর্বোপরি বিশ্বের কল্যাণ সাধন সম্ভব। আরও পড়ুন – চাণক্য নীতি: জীবন পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্যের চাবিকাঠি মানবজীবন স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষামূলক বা শিক্ষা বিষয়ক বাণী গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্য পূর্ন ও বটে। আমাদের জীবনকে সুষ্ঠ ও সুগম করে তোলার এবং যুবসমাজকে মানব উন্নয়নে, দেশের কল্যাণে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম। আজ এই আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার সংশ্লিষ্ট অর্থ তুলে ধরার চেষ্টা করা হল। উপরের লেখাটি আমাদের একটি প্রচেষ্টা। আশা করি ভালো লাগবে আমাদের পাশে থাকুন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।ধন্যবাদ।। Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share