কলকাতার দর্শনীয় স্থান সমূহ বিনোদন by admin - November 15, 2020November 15, 20200 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share কলকাতা শুধু একটা নাম নয় একটি প্রবাহমান ইতিহাস। যুগ যুগান্ত ধরে নানা জাতি,নানা ভাষা-ভাষী, নানা বৈচিত্র্যকে আপন করে নিজ ছন্দে এগিয়ে চলেছে কল্লোলিনী তিলত্তমা। স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্ব, নবজাগরনের জন্ম নেওয়া এই কলকাতায় কত যে মনীষী, স্বাধীনতা সংগ্রমী, কবি, লেখকের আর্বিভাব ঘটেছে ও তাঁদের কার্যপদ্ধতিতে রঙিন হয়ে উঠেছে এই শহর কলকাতার গৌরবান্বিত ইতিহাস তার ইয়ত্তা নেই। বিভিন্ন বিখ্যাত জমিদার পরিবার সগৌরবে ব্যবসা বানিজ্য করে এখানে গড়ে তুলছিলেন বাজার ও নগর জীবন । আনন্দ ও বৈচিত্র্যে পরিপূর্ন এই শহর তাই সাধের নাম পেয়েছে ‘City of Joy’ অর্থাৎ ‘আনন্দ নগরী’। সেইসব ইতিহাস এবং বিখ্যাত ব্যক্তি দের নিবাস, বড়ো বড়ো স্থাপত্য, কার্যালয়, ইমারতগুলিই ক্রমাগত কলকাতার দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। শিক্ষা-সংস্কৃতি, সাহিত্য, ভাস্কর্য, সংস্কার, আভিজাত্যের নানা ছাপ আজও যার আনাচে কানাচেতে দৃশ্যমান।আগ্রহের অন্তিম পর্যায়ে এনে আপনাদের আর অপেক্ষা করাবো না, চলুন তাহলে আজ কলকাতার কিছু বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান সমূহ ও তার বিবরন নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক। মার্বেল প্যালেসজোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িটেগর প্যালেসস্বামীজীর নিবাসকলেজস্ট্রিট এবার উপরিউক্ত স্থানগুলির বিবরণে আসা যাক: মার্বেল প্যালেস: মার্বেল প্যালেস বিখ্যাত উত্তর কলকাতার চোরাবাগানে অবস্থিত এই মার্বেল প্যালেস। অসম্ভব সুন্দর নির্মানসৌকর্য এই স্থাপত্যকে অনন্য সাধারণ করে তুলেছে। রাজেন্দ্র মল্লিক ১৮৩৫ সালে এই নির্মাণকার্য শুরু করেন।এই স্থাপত্য গ্রিসের ধাঁচে এবং রোমান কারুকার্যে তৈরি। উত্তর কোরিয়ার থাম, ফরাসির পোর্টিকো এই বাড়িকে সৌন্দর্যের বৈভবে ভরিয়ে তুলেছে। বিশ্বের বিখ্যাত চিত্রশিল্পের সম্ভার গড়ে উঠেছে এই একই ছাদের তোলায়। মেঝে, বারান্দা, সিঁড়ি, দালান প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিল্পের অভূতপূর্ব ছোঁয়া লেগে আছে তা বলা চলে সার্থক নাম মার্বেল প্যালেস। জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি: জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি কলকাতার দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম এবং বহু প্রতিভার আধার রূপে পরিচিত এই স্থান। রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, স্বর্ণকুমারী, গগনেন্দ্রনাথ, ইন্দিরা প্রমুখ সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের নানান প্রতিভার বাসভবন এই ঠাকুর বাড়ি। নীলমণি ঠাকুর অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদুর দাদু এই ঠাকুর বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানে যা ৬, দ্বারকানাথ ঠাকুর স্ট্রিটে অবস্থিত। এখানেই এখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রভারতী মিউজিয়াম সর্ব স্মৃতি অকপটে রক্ষা করে চলেছে। টেগর প্যালেস: টেগর প্যালেস যা ঠাকুর বাড়ির ইতিহাসের মধ্যে নিহিত। এই টেগর প্যালেসের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর। এখানেই জন্ম গ্রহন করেন নীলমণি ঠাকুর যিনি পরবর্তীকালে ঠাকুর বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। টেগর প্যালেসে আছেন লন্ডনের রয়াল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সদস্য প্রদ্যোতকুমার ঠাকুর। তিনিই কলকাতা অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠা করেন। টেগর প্যালেসের পাশে আছে টেগর ক্যাসেল যা যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর হাইল্যান্ড ক্যাসেলর ধাঁচে গড়ে তুলেছিলেন। তা আজ অধীক ভেঙে গেছে তবুও বেঁচে থাকা অংশ দিয়ে এটির পুরানো সাজসজ্জা বেশ লক্ষ্য করা যায় তা বলাই বাহুল্য। স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি: মানিকতলায়, বিবেকানন্দ রোডে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি। এই নিবাস কলকাতার দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে এক অনন্য নজির। এখানে উজ্জ্বল নক্ষত্র তথা মনীষী স্বামী বিবেকানন্দ জন্ম গ্রহন করেন। এই বাড়ি এখন সংগ্রহশালা হয়েগেছে। এখানে স্বামীজীর সমস্ত জিনিস সযত্নে সংরক্ষিত আছে। এখানেই তাঁর শৈশব কৈশোরের দিন অতিবাহিত হয়েছে। এখানে তাঁর শোয়ন কক্ষ, তাঁর মায়ের শিবপূজার জায়গা আজও বৃত্তমান। কলেজ স্ট্রিট: কলেজস্ট্রিট যার অপর একটি নাম বইপাড়া- কলকাতার দর্শনীয় স্থান তো বটেই সঙ্গে কলকাতার এক নোস্টালজিক জায়গা, পৃথিবীর হেন বই নেই যা এখানে পাবেন না। এই কলেজস্ট্রিট হল শিক্ষা, বিদ্যাচর্চার অন্যতম স্থান। নবজাগরনের সময় এখানে গড়ে উঠেছিল হিন্দু কলেজ বর্তমানে যা প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি যেখানে মাত্র সতেরো বছর বয়েসী ডিরোজিও তাঁর ছাত্রদের নিয়ে কুসংস্কার দূরীকরন, দেশের বিভিন্ন কাজের আত্মবলিদান দেবার কথা শিখিয়েছেন।এছাড়া ডেভিড হেয়ার নামাঙ্কিত হেয়ার স্কুল, হিন্দু স্কুল, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, সংস্কৃত কলেজ যেখানে স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয় পড়াতেন এখানে অবস্থান করে। বিখ্যাত আড্ডার জায়গা কফি হাউস ও প্যারামাউন্টের অতুলনীয় স্বাদের সরবত আজও বিরাজমান। আরও পড়ুন – দেখেনিন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার সেরা বনেদি বাড়ির দূর্গাপূজা আবেগময় শহর এই কলকাতা। যার প্রতিটি জায়গা ঐতিহাসিকতার সাক্ষী। জানা যায়, সুতানুটি, গোবিন্দপুর, কলিকাতা নিয়ে আজকের এই জমজমাটি কলকাতা। ব্রিটিশ রাজের রাজধানী ছিল শহর কলকাতা। তারা তাদের মতো করে এই শহর সাজাতে চেয়েছিলেন কিন্ত এখানকার শিক্ষিত সম্প্রদায় পাশ্চাত্যর সাথে সাথে প্রাচ্যকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে। তাই কলকাতার দর্শনীয় স্থান সমূহ আজও জীবন্ত তার নিজ গরিমায় আমাদের এত কাছের হয়ে আছে। এই নতুন প্রয়াস আপনাদের সঙ্গ পাওয়ায় খানিক সাহস দেখিয়ে শুরু করলাম। কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন। আরও নতুন ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনায় আসব খুব শীঘ্রই। পাশে থাকুন। ভালো থাকুন।ধন্যবাদ। Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share