কোলেস্টেরল কি: কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় শরীর ও স্বাস্থ্য by Poulami Ghosh - April 10, 2021April 10, 20212 Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share আজকাল এমন একটা বাড়ি খুঁজে মেলা ভার যেখানে সকলেই সুস্থ্য। পরিবেশে দূষণ, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ইত্যাদির জন্য আজ ঘরে ঘরে অসুস্থতা। কিছু অচেনা অসুখ আর কিছু চেনা অসুখ। কিন্তু যেই চেনা অসুখগুলোর নাম আমরা প্রতিদিন শুনি সেগুলো সম্পর্কে কতটুকু জানি আমরা? ডাক্তারি ভাষায় না হক, আসুন আজ আমরা বহু পরিচিত কোলেস্টেরল সম্পর্কে আজ জেনে নেই বিস্তারিত কিছু তথ্য যেমন কোলেস্টেরল কি, কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্যতালিকা। উপরুন্তু থাকছে কোলেস্টেরল কমানোর কিছু ব্যায়াম। চলুন জেনে নেই সেই চেনা ব্যাধিকে এবং তারসাথে এটাও জেনেনিন কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়! Table of Contents কোলেস্টেরল কি?গুড কোলেস্টেরল ব্যাড কোলেস্টেরল:কোলেস্টেরলের লক্ষণ:কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা:কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম কোলেস্টেরল কি? কোলেস্টেরল শব্দটির উৎস দুটি গ্রীক শব্দদ্বয় থেকে। ‘কলে’ অর্থাৎ পিত্ত এবং ‘স্টেরস’ অর্থাৎ ঘন পদার্থ। এছাড়া ‘অল’ হলো একটি রাসায়নিক বিভক্তি।সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেন এ বা কোষ ঝিল্লির মধ্যে কোলেস্টেরল থাকে। এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান। এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়ড হলো কোলেস্টেরল। যা সেল মেমব্রেন এ উপস্থিত থাকে। কোলেস্টেরলের প্রধান কাজ হলো মেমব্রেন এর মধ্যে দিয়ে তরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল রাখা। কোলেস্টেরল স্তন্যপায়ী প্রাণীর সবচাইতে জরুরি স্টেরল। এবং এটি বাইল অ্যাসিড, স্টেরয়েড হরমোন এবং ফ্যাট জাতীয় পদার্থে ভিটামিনের জৈব সংশ্লেষ ঘটায়। আমরা বুঝলাম কোলেস্টেরল কি। অবশ্য, গাছপালা এবং ছত্রাকের দেহে এটি অল্প পরিমাণে পাওয়া যায় এবং ব্যাক্টেরিয়া এর মধ্যে একেবারেই পাওয়া যায়না। গুড কোলেস্টেরল ব্যাড কোলেস্টেরল: আগেই বলা হয়েছে কোলেস্টেরল কি। এই কোথাও জানলাম কোলেস্টেরল এক অত্যাবশ্যক উপাদান আমাদের শরীরে। তবে এটিকে অসুস্থতার কারণ হিসেবে কেনো দেখছি আমরা? কেনই বা কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা এবং কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম জেনেই বা আমরা কি করবো? কারণ আছে। আমাদের শরীরে দুই ধরনের কোলেস্টেরল আছে। একটি ভালো , একটি খারাপ।হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন(এইছ ডি এল) যেই কোলেস্টেরল বহন করে সেটি ভালো। হার্টের সমস্যা থেকে আমাদের দূরে রাখে।আর অন্যদিকে , লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এল ডি এল) যেই কোলেস্টেরল বহন করে সেটি খারাপ। আমাদের হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। সমস্যা হলো এই খারাপ কোলেস্টেরল ই বেশি পাওয়া যায় মানব দেহে। এবং এর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বাঁচতে সারা বিশ্ব উঠে পরে লেগেছে। কোলেস্টেরলের লক্ষণ: কোলেস্টেরল কি আমরা জেনেছি। ভালো এবং খারাপ কোলেস্টরল কি তাও জেনেছি। কিন্তু, আমাদের শরীরে যে ব্যাড কোলেস্টেরল বা এল ডি এল যে বেড়ে চলেছে সেটা বুঝবো কি করে?প্রাথমিক ভাবে আমাদের শারীরিক কিছু অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে। যেমন: চোখের কর্নিয়ার পাশে ধূসর দাগ দেখা দিতে পারে।যেহেতু কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেকসময় রক্তনালী আটকে যায় যারফলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা পড়ে, সেইক্ষেত্রে ঘার ও মাথার পিছনে ভীষণ ব্যথা হয়।অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে।চোখের নিচে বা চোখের পাতায় সাদাটে বা হলদেটে কোনো অংশ ব্যথাহীন ভাবে ফুলে গেলে সেইটি ও একটি। তবে এগুলো হলেই যে ভয়ের কারন তা মোটেই না। এগুলো ইঙ্গিত। উপরিউক্ত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে সত্বর ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন এবং রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন।কিন্তু কোলেস্টেরল কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায় আছে যেগুলি খুবি সহজ। আসুন দেখে নেই সেগুলো। কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় দুটি বদল আনতে পারলেই কেল্লা ফতে। কোলেস্টেরল মুক্ত জীবন আপনার হাতে। একটি বদল খাবার থালায়, অন্যটি শরীরচর্চায়। কিছু খাদ্য তালিকা মেনে চললেই খুব সহজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা: এখনও অবধি আমরা জানতে পারলাম কোলেস্টেরল কি, এবং দেহে খারাপ কোলেস্টেরলের লক্ষণ কি। যদি রক্তপরীক্ষা এ দেখা গেলো আপনার কোলেস্টেরল বেশি রয়েছে তখন কি করবেন? প্রথমত অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলুন। দ্বিতীয়ত নিজের খাদ্য তালিকায় কিছু খাবার যোগ বিয়োগ করুন। আপনার জন্য রইলো কোলেস্টেরল কমানোর খাদ্য তালিকা। প্রথমে জেনে নিন কোন কোন খাবার যোগ করবেন। ১. ওটমিল বা ভুট্টার তৈরি খাবার। ওটমিল এবং কর্ন ফ্লেক্স এই দুই খাদ্যের উপকারিতা প্রচুর। শরীরে ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে খারাপ কোলে্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতেও সক্ষম এই পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্যগুলি। ২. বাদাম। বাদাম শরীরের ক্ষতিকর চর্বি পাঁচ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। ৩. শিম বা মটরশুঁটির বীজ। যেকোনো বিজেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। শিম বা মটরশুঁটির বীজ ও ব্যতিক্রম নয়। এবং শরীরে সঠিক পরিমাণে ফাইবার থাকলে ব্যাড কোলেস্টেরল থাকবে সাত হাথ দূরে। ৪. সামুদ্রিক মাছ। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। এতে প্রোটিন লেভেল বারে।এছাড়াও রক্তে ক্ষতিকারক ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। ৫. সবজি ও ফলমূল। প্রতিদিনকার মেইন মিলে সবুজ শাকসবজি রাখা খুব প্রয়োজন। সবুজ শাক সবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এবং আগেই বলা হয়েছে ফাইবার থাকলে কোলেস্টেরলের চিন্তা করতে হবেনা। আর এই একই কারণে আমাদের ফলমূল ও প্রয়োজন। ফলে নানান রকম ভিটামিন ও মিনারেলের সাথে সাথে রয়েছে ফাইবার যা শরীর কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এবার আসুন জেনে নেই কি খাবার বিয়োগ করতে হবে। ১. ভাজাভুজি। যতই বলুক এই তেলে রান্না আপনার হার্টের পক্ষে ভালো, ডাক্তারেরা সেই কথা কিন্তু মানতে নারাজ। ডিপ ফ্রাইড খাবার থেকে শত হাথ দূরে থাকুন যদি কোলেস্টেরলের কাছে না যেতে চান। ২. ট্রান্স ফ্যাট। কেক, কুকিস, চকলেটে রয়েছে ট্রান্স ফ্যাট। এই খাবারগুলো যত পারবেন এড়িয়ে চলুন। ৩. টিন- জাত বা প্রক্রিয়াজাত রেড মিট। এমনিতেই রেড মিটের উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা অনেক বেশি, তারপরে টা যদি হয় প্রসেসড তাহলে তো সেটি নৈব নৈব চো। সেইক্ষেত্রে সসেজ বা হ্যামের থেকে দূরে থাকুন। ৪. সোডা। বায়ুযুক্ত পানীয় তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে চিনি। যা আপনার শরীরে ক্ষতিকারক ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে এক পায়ে খাড়া। এর ফলে কোলেস্টেরল এর খারাপ প্রভাবের হাত থেকে পার পাওয়া ভার। আমরা যদি নিজেদের খাদ্য তালিকায় এই বদল আনতে পারি, সহজেই শরীর তরতাজা হতে উঠবে। খাবারের সাথে সাথে কিছু হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম কে না চায় কোলেস্টেরল ঘরে বসে কমাতে? ঘরে বসে সুস্থ্য থাকতে কিছু ডায়েট – এর সাথে কিছু ব্যায়াম করা উচিত।কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েকটি ব্যায়াম এই অর্টিকেলে দেওয়া হলো। এখানে বলা যেই কোলেস্টেরল কমানোর ব্যায়াম গুলো উল্লেখ করা হবে তা আমরা সহজেই করতে পারি।সবচেয়ে সুবিধাজনক কিছু যোগাসন যেমন নৌকাসন, মৎস্যাসন, ধানুরাসন, উষ্ট্রাসন, ভূজঙ্গাসন করা যেতে পারে।এছাড়া যদি পাড়া যায় তবে আধঘন্টা হাটা, সাঁতার, সাইক্লিং করলে উপকার পাবেন নিশ্চিত। আরও পড়ুন – ব্যবসায়ী লোন: সবচেয়ে কম সুদে লোন কোথায় এবং কীভাবে পাবেন আশা করি এই লেখাটি আপনার শরীর সুস্থ্য রাখবে। এবং কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায় আপনার জীবন অনেক সহজ করবে। কিন্তু ইন্টারনেটে কোনো লেখাই সর্বোপরি নয়। ডাক্তারের মতামতের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তবে একথা ঠিক আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে সঠিক খাবার এবং প্রতিদিন যদি কিছু ওয়র্কআউট করা যায়। শরীর ও মন দুই ভালো রাখা থেকে আপনাকে কেউ আটকাতে পারবেনা। সুস্থ্য থাকুন। লেখাটি কাছের মানুষের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে সুস্থ্য রাখুন। Share on Facebook Share Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share