ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন! নারীর সৌন্দর্যকে অন্যতম মাত্রা দান করে লম্বা সুন্দর ঘন রেশমী চুল। আমাদের প্রত্যেকেরই মনে আশা থাকে একগোছা লম্বা সুন্দর রেশমী চুলের। অথচ দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় চুলের দিকে ঠিকমতো খেয়াল করাই হয়ে ওঠে না। তাই চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শুষ্ক। আর এই রুক্ষ ও শুষ্ক চুলে চিরুনি চালালেই প্রচুর চুল উটতে থাকে, চুলের ডগা কাটতে থাকে। যার ফলে চুল পড়তে শুরু করে।
বর্তমানে আমরা প্রত্যেকেই চুল পড়া নিয়ে সমস্যায় জর্জরিত। তাই আমরা ত্বকের যেমন যত্ন নিয়ে থাকি। ত্বকের লাবণ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে– আমাদেরকে চমকপ্রদ, উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তুলতে। ঠিক তেমনি চুলের ও যত্ন নিতে হবে- ঝলমলে, স্বাস্থ্যজ্বোল, সুন্দর ও ঘন রেশমী চুলের জন্য!
এছাড়া, অতি রাসায়নিকযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার , অত্যাধুনিক স্টাইলে চুল কাটা, চুলে অতিরিক্ত হিট প্রয়োগ – এ সব আমাদের স্টাইল ও ফ্যাশনে সাহায্য করলেও চুলের ক্ষতি করে। চুলের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে বাঁধা সৃষ্টি করে ফলে প্রচুর চুল পড়তে থাকে। তাই আমাদের চুলের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে।
প্রত্যেকেরই চুলের ধরন আলাদা। তাই চুলের ধরন/ টাইপ অনুযায়ী যত্ন নেওয়ার কৌশল ও আলাদা আলাদা হয়।
মাসে একবার হেয়ারপ্যাক বা হেয়ার ওয়েল ব্যবহার করলে হবে না প্রতিদিন চুলের যত্ন নিতে হবে। আমরা অতি সহজেই ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিতে পারি যা স্বল্প ব্যয়ে ও অল্প সময়ে সম্ভব।
আপনার চুল যদি খুব বেশী পাতলা হয়ে যায় তাহলে নিচে দেওয়া এই সিরামটি ব্যবহার করতে পারেন, চুলকে পুনরায় ঘন করবে। আমি নিজে খুব ভালো ফল পেয়েছি।
এখানে ক্লিক করে কিনুন কিউসেরা সিরাম
এরপরই আমরা দেখে নেবো কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায়।
নারিকেল তেল চুলকে খুব ভালো ময়শ্চারাইজার করে। নারিকেল তেলে কয়েকটি মেথি দিয়ে ফুটিয়ে ম্যাসাজ করে কিছুক্ষণ রেখে তারপর শ্যাম্পু করলে চুল নরম হয়। চুলের গোড়া শক্ত ও হয়।
অলিভ ওয়েলের সাথে আমন্ড ওয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার চুলে মাসাজ করলে। চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
অলিভ ওয়েলে থাকা এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের পুষ্টি জোগায়। এছাড়া এতে ভরপুর ভিটামিন ই চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার অলিভ ওয়েল মাথার স্ক্যাল্পে ব্যবহার করা উচিত।
এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে যা চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। সারারাত ক্যাস্টর ওয়েল মেখে পরের দিন শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিলে খুব ভালো হয়। এছাড়া ক্যাস্টর ওয়েলের সাথে ভিটামিন ই বা অলিভ ওয়েল মিশিয়ে সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ বার মাখলে ভালো ফল হয়।
তিলের তেল চুলের কন্ডিশনিং করতে ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া খুসকি কমাতে হটওয়েল ট্রিটমেন্টে তিলের তেল ব্যবহার করা হয়।
চুলের যত্ন নিতে তেল মাসাজের সাথে সাথে হেয়ারপ্যাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যালভেরাতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন আর মিনারেলস চুলের পুষ্টি যুগিয়ে চুলকে ঘন ও ঝলমলে করে তোলে। চুলের যত্ন নিতে অ্যালভেরার হেয়ারপ্যাক খুবই কার্যকরী।
পদ্ধতি : একটি পাত্রে ১ কাপ ফ্রেশ অ্যালভেরা জেল, ক্যাস্টর ওয়েল ২ চামচ, মেথি গুঁড়ো ২ চামচ নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে সারারাত রেখে দিতে হবে। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনিং করতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহে ১-২ বার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
ডিমের কুসুমে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট চুলের কন্ডিশনিং করতে সাহায্য করে।
পদ্ধতি : ডিমের কুসুম ১ টা, অ্যালভেরার জেল ৪ চামচ, অলিভ ওয়েল ৩ চামচ একসাথে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে ।এরপর একটা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ঢেকে ২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। ডিমের গন্ধ অনেকে সহ্য করতে পারে না তাই এটি সপ্তাহে একদিন করা যেতে পারে।
দইয়ের সাথে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে একটা ঘন প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগিয়ে আধঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার করলে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে।
পাকা পেঁপের জুস ৪-৫ চামচ , অলিভ ওয়েল ৩ চামচ, এক কাপ অ্যালভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী করে স্ক্যাল্পে আর চুলের গোড়ায় ভালো করে মাসাজ করে ১ ঘন্টা রাখতে হবে।
তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে শ্যাম্পু করতে হবে। এই হেয়ারপ্যাকটি সপ্তাহে ১ বার করে দেখুন যথেষ্ট লাভজনক।
কিছুটা আমলকি নিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন একটা পেষ্ট তৈরি করে নিতে হবে। এর সঙ্গে ২ চামচ শিকাকাই পেষ্ট, এক চামচ মেথি পেষ্ট নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরী নিতে হবে। এই প্যাকটির সাথে নারিকেল তেল বা তিলের তেল মিশিয়ে উষ্ণ গরম করে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন – মুখের ব্রণ -র দাগ দূর করে মুখের তারুণ্য ফেরানোর কয়েকটি ঘরোয়া কৌশল
পেঁয়াজ ত্বক ও চুলের জন্য টনিকের কাজ করে। এছাড়া, পেঁয়াজে আছে সালফার যা চুল পড়া বন্ধ করে ও নতুন চুল গজাতে ভীষণ উপকারী।
পদ্ধতি : ১ টা আস্ত পেঁয়াজের পেষ্ট নিয়ে এর সাথে ২ চামচ শিকাকাই পেষ্ট, ২ চামচ কাঠ বাদামের তেল নিয়ে একসাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে আধঘন্টা রাখতে হবে। পরে শ্যাম্পু করতে হবে। এর ফলে চুলের শুষ্কতা কমবে। চুল মসৃণ ও প্রাণোচ্ছল হবে।
উপরোক্ত হেয়ারপ্যাকগুলি ব্যবহার করে ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নেওয়া যায় অতি সহজেই ।তবে সবগুলি একসাথে করলে বিশেষ ফল পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের চুলের ধরণ অনুযায়ী যার যেটা ঠিক মনে হবে সেটাই ব্যবহার করতে হবে।এভাবেই নিয়মিত ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন নিলেই চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে স্বাস্থ্যজ্বোল ও চুলের গোড়া শক্ত হয়ে চুলের বৃদ্ধি হবে।
এর সাথে সাথে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার রাখতে হবে যাতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। আর চুল হয়ে উঠবে রেশমী, ঘন ও সুন্দর।।
সকালবেলা আমরা যে উদ্দমের সাথে দিন শুরু করি যে এনার্জি লেভেলের সঙ্গে আমরা সারাদিন আমাদের…
স্বপ্ন যা আমাদের বাঁচাতে অনুপ্রাণিত করে, স্বপ্ন পূরণ এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যার জন্য লড়াই করতে থাকি…
সকালের ক্লান্ত আভায় ভেসে রাতের অন্ধকারে শান্তি খুঁজে পাই। সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে চাঁদ মামার…
আমরা সকলেই স্মার্ট যুগে নানান গণমাধ্যমের মধ্য দিয়ে গুড মর্নিং বা সুপ্রভাত বা শুভ সকাল…
আমাদের জীবনে চলার পথে নানা বিষয় আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হয় ভালো মন্দ মিশিয়ে। মানুষের ব্রম্ভাস্থ…
বিবাহ খুব পবিত্র শব্দ যা শত যুগ ধরে দুটি মানুষের সারাজীবনের বন্ধন হিসেবে স্থগিত করা…
View Comments
খুব সুন্দর টিপস